ঈদযাত্রার শুরুর দিনে শুক্রবার কমলাপুল রেলস্টেশন পরিদর্শনে এসে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় দেখতে পেয়েছিলেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তখন তিনি বলেছিলেন শনিবার থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু শনিবার শিডিউল বিপর্যয় আরো বেড়েছে। এতে ঘরমুখো যাত্রীরা পড়েছেন বিপদে। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ক্রমে বাড়ছে অপেক্ষা।
নিরাপদ বাহন হওয়ায় মানুষ ট্রেনেই বেশি ফেরেন নিজের শিকড়ে। কিন্তু ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় শুরু হওয়ায় অপেক্ষার শেষ নেই তাদের। রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনের প্যাটফর্মে এখন শুধুই ডিজিটাল ডিসপ্লেতে চোখ পেতে অধীর অপেক্ষায় যাত্রীরা। কিন্তু কখন এ অপেক্ষার অবসান হবে, তা জানে না কেউ।
ডিজিটাল ডিসপ্লেতে দেখা যাচ্ছে, চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছার কথা থাকলেও সেটি দুই ঘন্টা পরেও আসেনি। কখন কমলাপুর থেকে ছাড়বে সেটা বলা এখনও মুশকিল। একইভাবে রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছার কথা, কিন্তু সেটি বর্তমানে ঢাকায় আছে বলে ডিসপ্লেতে দেখা যাচ্ছে।
তবে তারাকান্দিগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস সকাল ১০টা ১২ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছে নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট পর ১০টা ১৭ মিনিটে স্টেশনটি ছেড়ে যায়।
পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছার কথা থাকলেও ডিসপ্লেতে দেখানো হচ্ছে, সেটি ঢাকায় আছে, তবে কখন কমলাপুর ছাড়বে, সেটার হদিস নেই। এছাড়া রংপুর এক্সপ্রেসের ঢ এবং এক্সট্রা-২ সহ তিনটি বগির টিকিট বিক্রি করা হলেও সেসব বগি নেই বলে স্টেশনের মাইকে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের বলা হচ্ছে, টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা নেয়ার জন্য। এ জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
রংপুর এক্সপ্রেসের এক্সট্রা-২ এর টিকিট কেটেছিলেন সুরাইয়া ইসলাম। কিন্তু বিধি বাম, সেই বগিই নেই। এখন কীভাবে তিনি বাড়ি পৌঁছাবেন, সেটি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, টিকিট ফেরত দিতে বলছে, কিন্তু এখন কেমনে যাবো বুঝতে পারছি না।
শুধু সুরাইয়া নন, এই তিন বগির এমন অনেক যাত্রী ঈদে বাড়ি ফেরা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
কাওসাইন হক নীলসাগর এক্সপ্রেসের যাত্রী। কিন্তু সেই ট্রেন কখন এসে পৌঁছাবে, সেটা তিনি নিজেও জানেন না। স্টেশনের ডিসপ্লেতে বারবার চোখ রাখছেন আর অপেক্ষা করছেন।
তিনি বলেন, অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না। তবে দেরি হলেও নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারলেই ভালো বলে জানিয়েছেন তিনি।